হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর শহিদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী কাজিপুরের গর্বের একটি নাম। স্বাধীকার থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম-প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তিনি ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানের খুব কাছের মানুষ। এই বিশ্বস্ততার পরিচয় কারাগারে ঘাতকের বুলেটের আঘাতে গড়িয়ে যাওয়া রক্ত পর্যন্ত অটুট ছিল। তাইতো বন্ধুপ্রতিম মনসুর আলীকে বঙ্গবন্ধু বাংলার প্রধানন্ত্রী করেছিলেন। এখনও মনসুর আলীর সন্তান ও প্রৌপুত্র মিলে জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার সাথে থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। সিরাজগঞ্জের কাজিপুরবাসির গর্বের মানুষ সেই মনসুর আলীর নামে দেশের নানাস্থানে অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কাজিপুরেও তার কমতি নেই। কিন্তু একটি দাবী ক্রমেই কাজিপুরবাসির প্রাণের দাবীতে পরিণত হচ্ছে। জোরালো আওয়াজ উঠেছে এখন চারদিকে। শহিদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা কাজিপুরবাসির অন্যতম চাওয়ার একটি।
এই দাবী আরও বাস্তবানুগ হয়ে উঠেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিটি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণার মধ্য দিয়ে। যেহেতু মনসুর আলী কাজিপুরের সন্তান। তার নির্বাচনি এলাকা তথা সংসদীয় আসন হলো সিরাজগঞ্জ-১ কাজিপুর, সেহেতু এই বিশ্ববিদ্যালয় শহিদ এম মনসুর আলীর নামে হবে এটাই স্বাভাবিক। আর সেটা কাজিপুরের মাটিতে প্রতিষ্ঠা হবে এটাও এখন সময়ের দাবী। আরও আশার কথা ইতোমধ্যে সিরাজগঞ্জে শহিদ এমন মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্থান হিসেবে মনসুর আলীর জন্মস্থান কাজিপুরে হলে সেটা একদিকে যেমন তা সময়োপযোগী পদক্ষেপ হবে অন্যদিকে দেশে তথা সারাবিশ্বে মনসুর আলীর জন্মস্থান কাজিপুর পরিচিতি লাভ করবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আরও একটি সুবিধা কাজিপুরে রয়েছে। একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় বহু স্থাপনার জন্যে অনেক জমির প্রয়োজন হয়। কাজিপুরে রয়েছে সুবিশাল চরাঞ্চল। যেহেতু কাজিপুরে নদী শাসনের কার্যক্রম চলছে তাই ভাঙনের আর ভয় নেই। ফলে চরের অব্যবহৃত জমি সস্তায় ব্যবহারযোগ্য করা যেতে পারে। কাজিপুরের সাথে জেলা শহরসহ সিমান্তবর্তি অন্য উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক ভালো। সিরাজগঞ্জ শহর থেকে সোনামুখী পর্যন্ত ৪৩ কিমি. আঞ্চলিক মহাসড়ক রয়েছে। সেইসাথে সিরাজগঞ্জ থেকে পিপুলবাড়িয়া হয়ে সোনামুখী পর্যন্ত শহিদ এম মনসুর আলী আঞ্চলিক মহাসড়কের নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। তাছাড়া নদীপথে যোগাযোগ ব্যবস্থাতো রয়েছেই।
এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে কাজিপুর এম মনসুর আলী সরকারী কলেজের সত্তরের দশকের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফজলুল হক মনোয়ার, সাইফুল ইসলাম পলাশী ও কাজিপুর উপজেলার ইতিহাস বইয়ের রচয়িতা আল মাহমুদ সরকার জুয়েল এই স্বপ্নের অনুভূতি কাজিপুরবাসির মনে ছড়িয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জোরালো দাবী নিয়ে মাঠে নেমেছেন। তারা ইতোমধ্যে পোস্টার সেঁটেছেন কাজিপুর উপজেলা পরিষদের গেটসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। লিফলেট ছাপিয়ে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর দৃষ্টি আকর্ষণে কাজ করে চলেছেন। সম্প্রতি কাজিপুরে জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে সরকারের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরা সহ এসডিজি বাস্তবায়ন সম্পর্কিত এক সভায় কাজিপুর প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক- প্রভাষক আবদুল জলিল ও সাইফুল ইসলাম পলাশী মনসুর আলী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম-এর মনোযোগ আকর্ষণ করেন। তাৎক্ষণিক তিনি জানান, অনেকগুলো কলেজ কাজিপুরে আছে সেগুলো চলছে কেমন? ভালো চলছে জানতে পেরে তিনি বলেন বিষয়টি পরে দেখা যাবে।
বলাবহুল্য এই প্রথম কাজিপুরে মনসুর আলী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা এমনি করেই আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় এলো। এরই মধ্যে ফজলুল হক, পলাশী ও জুয়েল কাজিপুরের প্রতিটি কলেজে, স্কুলে যাচ্ছেন এবং লিফলেট বিতরণসহ বিষয়টির গুরুত্ব ও প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্যতা তুলে ধরে সবার সহযোগিতা কামনা করার কাজ শুরু করে দিয়েছেন। তারা তাদের লিফলেটে উল্লেখ করেছেন‘ …জননেত্রি শেখ হাসিনা যখন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে অবিরাম কাজ করে চলেছেন এবং শিক্ষাক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য দেখিয়ে যাচ্ছেন ঠিক সেইসময় তার পাশে রয়েছেন উত্তরবঙ্গের কৃতি সন্তান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী আলহাজ্ব মোহাম্মদ নাসিম ও তার পুত্র কাজিপুরের সাবেক সাংসদ প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয়। তাদের বলিষ্ট নেতৃত্বে কাজিপুরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্মকান্ড বাস্তবায়িত হচ্ছে। আমরা কাজিপুরবাসি শহিদ এম মনসুর আলীর পরিবারের প্রতি চির কৃতজ্ঞ।
যুগের চাহিদা অনুযায়ী এবং বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর সাথে শহিদ এমন মনসুর আলীর অবদানকে চিরস্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে আমরা আমাদের প্রিয় নেতার নামে স্মৃতিবিজড়িত সংসদীয় আসন সিরাজগঞ্জ-১ কাজিপুর উপজেলায় শহিদ এম মনসুর আলী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করার লক্ষ্যে তানভীর শাকিল জয় এবং মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি’র মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রি শেখ হাসিনার নিকট সবিনয় দাবী জানাচ্ছি। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত কাজিপুরের ছাত্র/ছাত্রীবৃন্দ, শিক্ষকমন্ডলী, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে কর্মরত চাকুরিজীবি, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবি, শিল্পপতিসহ সুধীমন্ডলীর প্রতি আমাদের আকুল আবেদন, কাজিপুরবাসীর এই প্রাণের দাবীর প্রতি একাত্বতা ঘোষণা করুন এবং হাজারো কণ্ঠে আওয়াজ তুলুন ‘জননেতা নাসিম ভাই-প্রধান দাবী একটাই-কাজিপুরে ‘ শহিদ এম মনসুর আলী বিশ্ববিদ্যালয় চাই।
No comments:
Post a Comment