সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের কাচিহারা গ্রামে যৌতুকের দাবীতে মারপিটে আহত করার ঘটনায় মিনতি খাতুন (২৫) নামের এক গৃহবধু মারা গেছে। হত্যাকান্ডে নিহতের স্বামীর জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় পুলিশ গৃহবধুর স্বামীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, বগুড়ার ধুনট উপজেলার চরপাড়া গ্রামের কাজেম উদ্দীনের মেয়ে মিনতির খাতুনের (২৫) প্রায় ৮-৯ বছর আগে সিরাজঘ্জের কাজিপুর উপজেলার কাচিহারা গ্রামের সাগর আলীর ছেলে কামরুল হাসানের (২৮) সাথে বিয়ে হয়। সংসার জীবনের তাদের দুই সন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে কামরুল হাসান মিনতি খাতুনের পরিবারের নিকট ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবী করে আসছিলেন। কিন্তু যৌতুকের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় কামরুল হাসান প্রায়ই তাকে মিনতিকে মারধর করতেন। এক পর্যায় গত ২৮ আগষ্ট রাতে কামরুল হাসান তার স্ত্রী মিনতিকে মারপিট করেন। এসময় মিনতি খাতুন মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে গুরুতরভাবে আহত হন। খবর পেয়ে মিনতির পরিবারের লোকজন গত ৩০ আগষ্ট তাকে চিকিৎসার জন্য বগুড়া ডক্টরস ক্লিনিকে ভর্তি করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে মিনতি খাতুন আবারো স্বামীর পরিবারে ফিরে যান। গত ১২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মিনতি খাতুন মারা যান। খবর পেয়ে কাজিপুর থানা পুলিশ ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে মিনতির লাশ তার স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। এই ঘটনায় মিনতির বড় ভাই মিজানুর রহমান বাদি হয়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ কামরুল হাসানকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠান। কামরুল হাসানের বড় ভাই আমিুনল ইসলাম বলেন, মিনতি খাতুন মারা যাওয়ার সময় আমি ও আমার ছোট ভাই কামরুল হাসান বাড়িতে ছিলাম না। মিনতি আগে থেকে অসুস্থ ছিল। তাই সে বাড়ির ওঠান থেকে ঘরে ফেরার সময় পা ফসকে মাটিতে পড়ে মাথায় ও বুকে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে মার গেছে। স্বামীর-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি ও মারধরে সবার সংসার জীবনেই ঘটে। নিহত মিনতির বড় ভাই মামলার বাদি মিজানুর রহমান বলেন, কামরুল হাসান ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবীতে তার বোনকে অমানুষিক নির্যাতন ও শারীরিকভাবে মারপিট করা হয়েছে। সেই মারপিটের সময় মিনতি মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে নিহত হয়েছে।
কাজিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সমিত কুমার কুন্ডু বলেন, স্বামীর নির্যাতনে গৃহবধুর মৃত্যুর খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তার স্বামীকে আটক করা হয়েছে। পরে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রিপটঃ-টি এম কামাল
No comments:
Post a Comment