Thursday 9 November 2017

মুক্ত বাংলঃ-সবাইকে জুম্মা মোবারক।


 আজ পবিত্র জুম্মাবার।।।
....人
.. ( ◎ )
..║∩║____ 人
..║∩║_ .-:'''"''";-.
..║∩║ (*(*(*|*)*)*)
..║∩║∩∩∩∩∩∩║
===================
===================

জুমা'আর এই দিনে আসুন আমরা সবাই
আল্লাহ্ তা'আলার কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও "জান্নাতুল ফিরদাউস" লাভের জন্য
দোয়া করি।

মুক্ত বাংলাঃ- কাজিপুরে" ব্যথার কমল " কাব্যগ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত ।



মুক্ত বাংলা প্রতিনিধি :-কাজিপুর সাহিত্য পরিষদ আয়োজিত কবি মোঃ রফিকুল ইসলাম স্যারের" ব্যথার কমল "  কাব্যগ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত । বৃহস্পতিবার মেঘাই ই ইউ আই উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে কাব্যগ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। কাজীপুর সাহিত্য পরিষদের আয়োজনে,জনাব রফিকুল ইসলাম সাহেবের (সভাপতি কাজীপুর সাহিত্য পরিষদ) প্রথম কাব্যগ্রন্থ “ব্যথার কমল” এর প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি জনাব, অধ্যক্ষ মোজ্জামেল হক বকুল সরকার।বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন আলহাজ্ব শাহ আলম,আনোয়ার হোসেন, রেজাউল করিম রাঙা,শামস ই ইলাহী অনু,আমিনুল ইসলাম,আলমগীর হোসেন, ফরিদুল ইসলাম,আলী আশরাফ, মাহবুবুর রহমান, ডাঃ মিজানুর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, হুসনে আরা আরজু সহ কাজীপুর সাহিত্য পরিষদের সম্মানিত সদস্যগণ।
অনুষ্ঠানে বই নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন আবদুল জলিল স্যার।

Tuesday 7 November 2017

মুক্ত বাংলাঃ-কাজীপুরের মানুষের জন্যে এই সরকার আশীর্বাদ স্বরূপ - মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী নাসিম।


জননেত্রি শেখ হাসিনার পাশে থেকে আমৃত্য দেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যেতে চাই- মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী নাসিম।
আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রি মোহাম্মদ নাসিম বলেন, কাজীপুরের মানুষের জন্যে এই সরকার আশীর্বাদ স্বরূপ। তাই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য কাজীপুরবাসিকে একতাবদ্ধ থেকে সব সমস্যা মোকাবেলা করার আহবান জানান।
তিনি বলেন,
আওয়ামীলীগ বিজয়ী হলে সারা দেশের উন্নয়ন হয়। আওয়ামীলীগ যখনই এদেশের ক্ষমতায় থাকে তখনই দেশব্যাপি সকল ক্ষেত্রে
ব্যাপক উন্নয়ন ঘটে। দেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, অবকাঠামোগত, ক্ষেত্র ছাড়াও সকল ক্ষেত্রে ব্যপক উন্নয়ন ঘটেছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা উল্লে করে তিনি বলেন, দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র মুক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার।
জননেত্রি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দল ক্ষমতায় গিয়ে এদেশকে এখন মধ্রম আয়ের দেশে পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন-২০১৮ সালে ডিসেম্বর বিজয়ের মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে এবং উন্নয়ন ও শান্তির জন্য এদেশের জনগণ আবারও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগকে বিজয় করবে। তিনি বলেন- খালেদা জিয়ার দল ক্ষমতায় এসে উন্নয়নের নামে দেশ মানুষকে ডুবিয়েছে, দেশের ধ্বংস করেছে। তাদের আমলে জঙ্গীবাদের উত্থান হয়েছে,তারা হাওয়াভবন সৃষ্টি করে লুটপাট করেছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে সিরাজগঞ্জর কাজিপুরে শহীদ এম মনসুর আলী ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজী উদ্বোধন শেষে এক বিশাল জনসভায় একথা বলেন।
শহীদ এম মনসুর আলী ইনষ্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজী (আই এইচ টি) ভবনের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজীত জন সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কাজটি বাস্তবায়ন করেছেন।
আই এইচ টির অধ্যক্ষ ডাঃ মোঃ শরিফুল ইসলামে সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম এ মোহী পরিচালক চিকিৎসা , শিক্ষাও স্বাস্থ্য, জনশক্তি উন্নয়ন ডাঃ মোঃ আঃ রশিদ, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকা, পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ, সিভিল সার্জন ডাঃ শেখ মোঃ মনজুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক সরকার। অন্যদের মধ্যে আ,লীগ সভাপতি শওকত হোসেন, সম্পাদক খলিলুর রহমান সিরাজী, ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম, শহিদ সরোয়ার প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

মুক্ত বাংলা কাজিপুরের আঙচলিক ফেসবুক পেইজ ।
মুক্ত বাংলা ফেসবুক পেইজঃ-https://www.facebook.com/muktobangla.kazipur/

Thursday 2 November 2017

মুক্ত বাংলাঃ-মৃত্যুঞ্জয়ী শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী



বাংলাদেশের রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ সহচর ও সহযোদ্ধা এবং বঙ্গবন্ধু সরকারের সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শহীদ এম মনসুর আলী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরেই যাঁদের ত্যাগ, অবদান ও জীবন দান উজ্জ্বল এবং ভাস্বর, তাঁদের মধ্যে শহীদ এম মনসুর আলীর নাম বাদ দিলে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। এই মহৎপ্রাণ শহীদ এম মনসুর আলী সম্পর্কে যা আমাদের অবশ্যই জানার প্রয়োজন তার খুবই সংক্ষিপ্ত অংশ এখানে জানতে পারব।

জন্ম : শহীদ এম মনসুর আলীর জন্ম ১৯১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কুড়িপাড়া গ্রামে। কুড়িপাড়া থেকে সিরাজগঞ্জ শহরের দূরত্ব প্রায় ১৯-২০ কিলেঅমিটার। যমুনায় ভাঙনের পরে তারা কাজীপুর উপজেলার মেঘাই এলাকায় বসবাস শুরু করেন।

পারিবারিক পরিচয় : শহীদ এম মনসুর আলী জন্ম গ্রহণ করেন অভিজাত মুসলিম পরিবারে। বাবার নাম হরফ আলী সরকার, মা বেগম রওশন আরা।

শিক্ষাজীবন : শহীদ এম মনসুর আলী শিক্ষা জীবনে পাঁচ বার বৃত্তি পেয়েছিলেন। তাঁর শিক্ষা শুরু হয়েছিল কাজীপুরের গান্ধাইল মাইনর স্কুলের মাধ্যমে। এরপর ১৯৩৫ সালে সিরাজগঞ্জের বি.এল স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৩৭ সালে আইএ পাস করেন রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে। ১৯৪১ সালে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিএ এবং ১৯৪৪ সালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে প্রথম শ্রেণিতে এমএ ও এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন।

বৈবাহিক জীবন : সহধর্মিণী মহীয়সী নারী মোসাম্মৎ আমিনা খাতুন।  তিনি বেগম আমিনা মনসুর আলী হিসেবে নাম সার করতেন। আমিনা মনসুরের জন্ম  এক সম্ভ্রান্ত ও শিক্ষিত পরিবারে। তাঁর বাবা মরহুম আমির উদ্দিন সরকার ছিলেন জেলা জজ। স্থায়ী বাসস্থল ও জন্মস্থান বর্তমান গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থানার জজ বাড়ি। মা মরহুম রওশন আরা বেগম সম্ভ্রান্ত জমিদার বংশের মেয়ে।

ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী : শহীদ এম মনসুনর আলী সেনাবাহিনীর কোনো ক্যাপ্টেন ছিলেন না। তিনি ছিলেন পাকিস্তান ন্যাশনাল গার্ডের ক্যাপ্টেন। এ বিষয়ে যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন।

কর্মজীবন: এম মনসুর আলীর কর্মজীবন শুরু হয় আইন পেশার মাধ্যমে। পাবনা বারে যোগ দেন ১৯৪৫। তিনি ১৯৫৮ সালে যোগ দেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান হাই কোর্ট বারে। শহীদ এম মনসুর আলী ১৯৭০ সালে পাবনা আইন কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ৭০ সালের ১ জুলাই থেকে ৭২ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত কলেজের অবৈতনিক অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে তাঁরই উদ্যোগে কলেজের নামকরণ করা হয় শহীদ আমিনুদ্দিন আইন কলেজ। ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সিরাজগঞ্জের কাজীপুর নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আতাউর রহমান খান যখন তৎকালীন পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন, তখন প্রাদেশিক মন্ত্রিসভায় ক্যাপ্টেন মনসুর আলী তিনটি মন্ত্রণালয়ের (খাদ্য, আইন ও রাজস্ব) দায়িত্ব নিয়ে মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনেও বিপুল ভোটে জাতীয় পরিষদের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মুজিবনগর মন্ত্রিসভায় এম মনসুর আলী ছিলেন অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী। ১৯৭২ সালের সদ্য স্বাধীন বিধ্বস্ত বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু সরকারের পুনর্গঠিত মন্ত্রিসভায় এম মনসুর আলী দায়িত্ব পান যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের। মনসুর আলী তাঁর একনিষ্ঠতা, সততা ও কর্মদক্ষতার কারণে ১৯৭৪ সালের ৮ জুলাই যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব পান। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ছিলেন প্রেসিডেন্ট এবং এম মনসুর আলীকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

দেশের জন্য জীবন দান : ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এম মনসুর আলী ছিলেন পাবনার বাড়িতে। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাসঘাতকদের হাতে ১৫ আগস্টে সপরিবারে নিহত হন। ছেলে মোহাম্মদ নাসিমের টেলিফোনে এই খবর জানতে পারেন। এরপর মনসুর আলী আবার ঢাকায় আসেন। ‘মীরজাফর’ খন্দকার মোশতাক আহমেদের অবৈধ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন না করায় মনসুর আলীসহ বঙ্গবন্ধুর চার বিশ্বস্ত অনুসারীকে আটক করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে ঘটে পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড। জেলখানার ভেতরে নৃশংসভাবে খুন করা হয় জাতীয় চার নেতা  এম মনসুর  আলী, তাজউদ্দিন আহম্মদ, এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও সৈয়দ নজরুল ইসলামকে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি বলেন, ‘শহীদ এম মনসুর আলী আমার পিতা, আমার অহংকার। আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ ও আমার জীবনের বড় পরিচয় আমার পিতা শহীদ এম মনসুর আলী। আমি আমার পিতাকে হারিয়েছি এর চেয়ে বড় বেদনার, আর এর চেয়ে বড় কষ্ট আমার জীবনে কিছু নাই।’

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘শহীদ এম মনসুর আলী সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে চারজন জাতীয় নেতা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সফল নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তার অন্যতম শহীদ এম মনসুর আলী। যিনি আমার গর্বিত পিতা এবং সব সময় সব মুহূর্তে আদর্শিক নেতা।’

‘যখনি আমি কোনো কাজ করি, চিন্তা করি সে সময় আমার চিন্তা-চেতনায় সব সময় আমার বাবার স্পর্শ- আবেগ অনুভব করি। তিনি যেমন জীবনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলেন, তেমনি মরণেও আজকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গেই আছেন। আমার পিতা তাঁর পরিবারের বাইরে প্রতিটি মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুর কথা ভাবতেন, বঙ্গবন্ধুর কথা বলতেন। বঙ্গবন্ধু ছাড়া যেন তাঁর কোনো অস্তিত্ব ছিল না। মাঝে মাঝে আমার মনে হতো তিনি যেন আমাদের চাইতে বঙ্গবন্ধুকে বেশি ভালোবাসতেন। তিনি যখন রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছেন সেই মুহূর্ত থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু ছাড়া তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কোনো কিছু করারই চিন্তা করতেন না।’

‘আমি তাঁর সন্তান হিসেবে দেখেছি ৬ দফা আন্দোলন যখন বঙ্গবন্ধুর অনেক সহকর্মী তাঁকে ত্যাগ করে চলে গেছেন কারাবন্দি অবস্থা থেকেও আমার পিতা এম মনসুর আলী শত প্রলোভন ও চাপের মুখেও তখনকার পিডিএমপন্থী আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান খান, সালাম খানদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। অথচ র্দীঘ কারাজীবন ভোগ করেছেন। কিন্তু নেতা শেখ মুজিবের সঙ্গে বেঈমানি করেননি। আমার পিতার দৃঢ় অভিব্যক্তি মনোভাবকে দেখেছি তখন আমি। ১৯৬৬-৬৭ সালে যখন শহীদ এম মনসুর আলী পাবনা কারাগারে বন্দি ছিলেন, আমিও ছাত্রাবস্থায় পিতার সঙ্গে সে মুহূর্তে একই কারাগারে আটক ছিলাম। দীর্ঘ রাজনৈতিক লড়াই, সংগ্রাম শেষে যখন একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, বঙ্গবন্ধু যখন পাকিস্তানে কারাগারে বন্দি তখন আমার পিতাসহ জাতীয় চার নেতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে মুজিবনগর সরকার গঠন করে মুক্তিযুদ্ধেও সফল নেতৃত্ব দেন। সেই বিরল মুহূর্তগুলো দেখার বা জানার আমার সুযোগ হয়েছে। আমি দেখেছি সেই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে শহীদ এম মনসুর আলী কী দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ মনোভাব নিয়ে স্বাধীনতার বিজয় এবং জীবিত বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার জন্য অন্য তিন জাতীয় নেতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং কাজ করে গেছেন। খন্দকার মোশতাকের মতো একজন সুযোগ সন্ধানী বিশ্বাসঘাতক ওই প্রবাসী মুজিবনগর সরকারের মুহূর্তেও চেষ্টা করেছে এই চারজনের মধ্যে ফাটল ধরাবার জন্য এবং স্বাধীনতার প্রশ্নে আপস করার নানা প্রলোভনের জাল বিস্তার করে মুজিবনগর নেতৃত্বকে বিভ্রান্ত করার। কিন্তু একটি বিপজ্জনক এবং জাতির যুগসন্ধিক্ষণে এম মনসুর আলী অন্য তিন নেতার সঙ্গে থেকে সব ভয়-ভীতি, অনিশ্চয়তা ও প্রলোভন উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধকে সফল করেছেন।’

‘সফেদ সাদা পায়জামা, পাঞ্জাবি পরে আমার পিতা মনসুর আলী এই ক মাস অত্যন্ত সাধারণ জীবন- যাপনের মধ্য দিয়ে মুজিবনগরের রণাঙ্গনে ছুটে বেরিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে থেকেছেন, সাহস দিয়েছেন। প্রবাসী সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে শত শত তাঁর দলীয় সহকর্মী, দেশ থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার কর্মীকে আর্থিক সাহায্য করার চেষ্টা করেছেন। আমি দেখেছি হাজার অনিশ্চয়তা ও অমানিশা অন্ধকারের মধ্যেও সাধারণ বাঙালির চেয়েও দীর্ঘদেহী আমার পিতার উজ্জ্বল প্রত্যয় মুখচ্ছবি। তিনি সর্বদা বলতেন, ‘জীবিত বঙ্গবন্ধুকে আমরা ইনশাল্লাহ মুক্ত করব।’ আসলে জাতীয় চার নেতার নেতৃত্বে মুজিবনগরে যে মুক্তিযুদ্ধের সফল নেতৃত্ব সংগঠিত হয়েছিল তা নিয়ে একটি মহাকাব্য রচনা করা যেতে পারে। একটি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশের যোগাযোগ অবকাঠামো গড়ে তোলা, চট্টগ্রাম ও খুলনা পোর্ট পুনরায় চালু করে কার্যকর বন্দরে পরিণত করা, সর্বোপরি এক নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, স্বাধীনতাবিরোধী এবং তথাকথিত হঠকারী বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রী নামধারীকারীদের অপতৎপরতা রোধ করে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা ছিল কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবু তিনি সেসবের মোকাবিলা করেছেন।’

‘আমার পিতাকে চিরদিনের জন্য হারানোর আগে মাত্র কয়েক ঘণ্টা তার সঙ্গে আমি ছিলাম। ১৫ আগস্টের সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। সে সময় তাকে দেখেছি কী উদ্বেগ ও প্রচণ্ড বেদনা নিয়ে একদিকে বঙ্গবন্ধুকে হারানোর কথা মনে করছেন, অন্যদিকে প্রতিশোধ ও  প্রতিরোধ গড়ে তোলার অদ্যম ইচ্ছে নিয়ে দলীয় সহকর্মী এবং তদানীন্তন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন। শহীদ এম মনসুর আলী আত্মগোপন অবস্থায়ও চেষ্টা করেছেন নানাভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য। কিন্ত কিছু সহকর্মীর ভীরুতা, আপস এবং জীবন রক্ষার প্রাণান্ত চেষ্টা, অন্যদিকে তখনকার সামরিক-বেসামরিক নেতৃত্বের চরম ব্যর্থতা, চরম কাপুরুষতায় শহীদ এম মনসুর আলী ভীষণভাবে ব্যর্থ হয়েছিলেন এবং হতাশ হয়েছিলেন। কিছু করতে না পারার বেদনা এবং অশ্রুসিক্ত চেহারা আমি দেখেছিলাম। কিন্ত একটা জিনিস ধ্রব তারার মতো সত্য, তিনি জীবন দেবেন। আমার পিতা শহীদ এম মনসুর আলী বিশ্বাসঘাতক মোশতাকের মুখের ওপর বলেছিলেন, ‘তোমার মতো বেঈমানের সাথে আমি হাত মেলাব না। জীবন দেব, প্রধানমন্ত্রী হব না।’ তিনি তাঁর কথা রেখেছেন। শহীদ এম মনসুর আলী আপস করেননি, আত্মসমর্পণ করেননি, জীবনের  ভয়ে মাথানত করেননি, ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে বন্দি অবস্থায় ঘাতকের হাতে জীবন দিয়েছেন।’

‘চার মৃত্যুঞ্জয়ী নেতার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে চিরদিন। যাঁরা জীবন দিয়েছেন, জাতির জনকের সাথে বেঈমানি করেননি। তাদের ভেতর একজন আমার পিতা শহীদ এম মনসুর আলী। আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ ও আমার জীবনের বড় পরিচয়। আমার জীবনে সবচেয়ে বড় গর্ব ও অহংকার হলো আমি খন্দকার মোশতাকের মতো বড় বেঈমানের সন্তান নই। শহীদ এম মনসুর আলীর মতো একজন সাহসী মৃত্যুঞ্জয়ী পিতার সন্তান। নেতা বা নেতার আদর্শের সঙ্গে বেইমানি নয়, বিশ্বাসঘাতকতা নয়, কোনো আপসকামিতা নয়। আমার শহীদ পিতার এই আদর্শ ধরেই আমি কাজ করছি, কাজ করে যাব। ৩ নভেম্বরে শহীদ পিতার প্রতি এটাই আমার প্রত্যয়দীপ্ত শ্রদ্ধা।’ বলছিলেন মোহাম্মদ নাসিম।

মুক্ত বাংলাঃ-চার জাতীয় নেতার পরিবারের স্মৃতিচারণ


এম মনসুর আলীর ছেলে মোহাম্মদ নাসিম

জাতীয় চার নেতার সন্তানদের মধ্যে মন্ত্রিসভায় রয়েছেন দু’জন। তাদের একজন এম মনসুর আলীর ছেলে মোহাম্মদ নাসিম। দায়িত্ব পালন করছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী হিসেবে। ছাত্রজীবন থেকে আওয়ামী রাজনীতি করে আসা নাসিম ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগেরও শীর্ষ নেতাদের একজন।

ভয়াল নভেম্বরের কথা স্মরণ করতে গিয়ে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকেই আমার উপর হুলিয়া জারি ছিল। গ্রেফতারের পরও আব্বাকে কোনোদিন দেখতে যেতে পারিনি, বিভিন্ন মাধ্যমে আব্বাসহ জাতীয় নেতাদের খোঁজ-খবর রাখতে পেরেছিলাম।’

‘ঢাকায় আমাদের কোনো বাসা ছিল না। আব্বা আত্মীয়ের বাসায় থেকে জাতীয় রাজনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করতেন। আব্বা যখন গ্রেফতার হয়ে জেলে ছিলেন তখন দুই থেকে তিনবার আম্মা দেখা করতে পেরেছিলেন।’

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘তবে, খুনী মোশতাকের চক্রান্তে আব্বা কখনো পা রাখেননি। জেলখানায় থাকা অবস্থায় আব্বাকে মোশতাকের সরকারে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। আব্বা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই ছিল তার আদর্শের রাজনীতি। জীবন গেলেও নিজেকে আদর্শচ্যুত করেননি।’

পিতার মৃত্যুর পর নিজেদের পারিবারিক দুরবস্থার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একে তো ঢাকায় আমাদের থাকার বাসা নেই, দ্বিতীয়ত তখন এম মনসুর আলীর পরিবার হিসেবে কেউ সহযোগিতা করলে তাদেরও বিপদ ছিল। এখন জাতীয় নেতার পরিবার হিসেবে কত সম্মান পাই। কিন্তু, তখনকার সময়টা ছিল ঠিক উল্টো।’

নাসিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনকে অনুসরণ করে আব্বাও খুব সাধারণ জীবনযাপন করতেন। দেশের জন্য ত্যাগ-তিতিক্ষার জীবনে বিলাসিতা গ্রহণ করেননি। ফলে আমরাও তেমন কোনো চাকচিক্যের মধ্যে বড় হইনি। সেই দিনগুলো কখনো ভোলা যাবে না।’

তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে সিমিন হোসেন রিমি

বাংলাদেশের ইতিহাস এবং সিমিন হোসেন রিমির বেড়ে ওঠা যেন সমান্তরাল রেখা। বাংলাদেশ জন্মের দশ বছর আগে পৃথিবীতে তার আগমন। তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে হওয়ার কারণে বাংলাদেশের ইতিহাসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে তার ।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বরের ঐতিহাসিক জেল হত্যার ঘটনায় সিমি হোসেন হারিয়েছেন তার বাবাকে। বাঙালী জাতি হারিয়েছে তার শ্রেষ্ঠদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম সন্তানদের।

চল্লিশ বছর পর সেই দিনের কথা জানতে চাইলে সিমিন হোসেন রিমি দ্য রিপোর্টকে জানান, “আব্বু জেলে যাওয়ার পর থেকেই বলতেন আমাদের আর বাঁচিয়ে রাখবে না। এই আশঙ্কা করলেও তার মধ্যে কোনো ভীতি কাজ করতো না। আমি শেষবার আব্বার সঙ্গে দেখা করেছিলাম অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে। সেদিন আমাকে বলেছিলেন, ‘মুজিব ভাইকে স্বপ্নে দেখলাম, বলছেন- তাজউদ্দীন তুমি আমার কাছে চলে এসো। তোমাকে ছাড়া আমার ভাল লাগে না’।”

এর দুই সপ্তাহের মধ্যেই তাজউদ্দীন আহমদকে প্রিয় ‘মুজিব ভাই’য়ের কাছে পাঠিয়ে দেয় ঘাতকরা। ১৫ আগস্টের বিহ্বলতায় তাজউদ্দীন আহমদ তার পরিবারের কাছে বলেছিলেন, ‘আমি মুজিব ভাইয়ের পাশে থাকতে পারলে তার শরীরে কেউ আঁচড় দিতে সাহস পেতো না’। বঙ্গবন্ধু এবং তাজউদ্দীন ছিলেন হরিহর আত্মা। শেষ জীবনে কিছুদিনের বিচ্ছেদের পর মৃত্যু তাদের আবারও একত্রিত করেছে।

সিমি বলেন, ‘চার নভেম্বর আব্বুর লাশ বাড়ি আনার পর প্রথম কয়েক ঘন্টা আমি কাদঁতে পারিনি। তখন আমার বয়স ১৪। এমন দৃশ্য কীভাবে দেখছি (লাশের মুখ) তা ভেবে পাচ্ছিলাম না। আগে তো আব্বু জেলে থাকলে বা অন্য কোনো সমস্যা হলে মুজিব কাকুসহ অন্যরা খোঁজ-খবর নিতেন।’

নভেম্বর মাস থেকে নতুন জীবন শুরু হয় জানিয়ে সিমিন হোসেন রিমি বলেন, ‘আমাদের বাসায় ভয়ে কেউ আসতেন না। নিচের তলাটি একটি স্কুলের কাছে ভাড়া ছিল। তারাও চলে গেল। চরম আর্থিক সমস্যার মধ্যে চলতে হয়েছে। খালি বাসা দেখে কেউ এসে যখন জানতো এটা তাজউদ্দীন আহমদের বাড়ি কেউ ভাড়া নিতে চাইতো না।’

‘শিশু-কিশোর বয়সে মানুষের ভাবনাহীন জীবন পার করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, আমাদের সময়টা সেভাবে কাটেনি। একদিকে যেমন যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন হওয়ার ঘটনার সাক্ষী হয়েছি, তেমনি জীবনযুদ্ধের সঙ্গে লড়তে হয়েছে সমানতালে।’

‘হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি হায়েনারা, আমাদের ঠিক মতো আব্বুর করবস্থানে যেতে দেয়নি কয়েক বছর। যাদের হাত দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে তাদের এই পরিণতি পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর লোকজনও করতে পারে নি। স্বাধীন বাংলাদেশে তাই হয়েছে। এগুলোও কি বিশ্বাসযোগ্য বিষয় হতে পারে?’ প্রশ্ন রিমির।

সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম

বাংলাদেশের প্রথম উপ-রাষ্ট্রপতি ও মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী সৈয়দ নজরুল ইসলামের দ্বিতীয় ছেলে মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম পিতার হত্যাকাণ্ডের কথা জানতে পারেন ঘটনার কয়েকদিন পর।

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সাফায়েতুল বলেন, ‘আব্বাকে যখন জেলখানায় হত্যা করা হয় তখন আমি কুমিল্লা সেনানীবাসে কর্মরত। ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকেই আমাকে নিয়ে পরিবারের টেনশন ছিল। পারিবারিক কয়েকজন বন্ধুর (আব্বা-আম্মার পরিচিত) কারণে সেনাবাহিনীতে অনেক সমস্যার মধ্যেও কিছু মানুষের সহযোগিতা পেয়েছি। যখন বেশি সমস্যা দেখা দিয়েছে তখন কয়েকদিন লুকিয়ে থেকেছি।’

কবরস্থানে আর্মির নিয়ন্ত্রণ থাকায় নিজের বাবার লাশ দেখতে না পারা সাফায়েতুল ইসলাম ভালভাবে বাবার কবরটুকু জিয়ারত করতে পারেননি। এক পর্যায়ে কবরস্থানের প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢুকে বাবার কবর জিয়ারত করে আসতে পেরেছিলেন।

মোশতাক নিজে বেশ কয়েকবার সৈয়দ নজরুল ইসলামের কাছে সরকারে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পাঠিয়েছিলেন। নজরুল ইসলাম সেসব প্রস্তাবকে পায়ে ঠেলে নিশ্চিত মৃত্যুর পথকেই বেছে নিয়েছিলেন। ‘এমন পিতার সন্তান হওয়া সত্যিই গর্বের’, যোগ করেন সাফায়েতুল ইসলাম।

নিজেদের পরিবারের প্রসঙ্গ এলে বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে কোনোভাবেই আলাদা করতে পারেন না সাফায়েতুল।

তিনি বলেন, ‘দুই পরিবার হলেও রাজনীতির বাইরেও পারিবারিক সম্পর্কটা এমন ছিল যে, কেউ কাউকে ছাড়া নয়। এই দেশের জন্য সবচেয়ে বড় ত্যাগ বঙ্গবন্ধুর। তিনিসহ তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যই নেই। সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে থাকা তার দুই মেয়ের মধ্যে শেখ হাসিনার প্রথম সরকারের সময় তার সামরিক সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। তাদের পরিবারের কাছে আমাদের অনেক ঋণ।’

তিনি আরও বলেন, ‘আব্বা নেতা হিসেবে সব সময়ই বঙ্গবন্ধুকে সম্মানের জায়গায় রেখে কথা বলতেন, সম্বোধন করতেন। কখনো কখনো মনে হয়, যদি সেই অনাকাঙ্ক্ষিত দিনগুলো বাংলাদেশের বুকে না আসতো, আজও হয়তো বেচেঁ থাকতেন তারা।’


এ এইচ এম কামরুজ্জামানের ছেলে এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন

জাতীয় নেতা কামরুজ্জামানের দুই ছেলে ও চার মেয়ের মধ্যে খায়রুজ্জামান লিটন চতুর্থ। তার বাবার সঙ্গে শেষ স্মৃতির কথা জানাতে গিয়ে দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ‘আব্বা খুব রাশভারি মানুষ ছিলেন। তার সামনে আমরা সহজে উচ্চস্বরে হাসাহাসি করতাম না। তখন কলকাতায় পড়াশোনা করি। ১৯৭৫ সালের জুন-জুলাইয়ে গ্রীষ্মের ছুটিতে বাড়িতে বেড়াতে এসেছি, ইলিশের মৌসুম। একদিন খেতে বসে হঠাৎ করেই আমাদের দুই ভাইকে ডেকে পাঠালেন। বললেন পাশে বসে খাওয়ার জন্য। এভাবে কয়েকদিন আমাদের নিয়ে খাওয়া-দাওয়া করলেন আব্বা। এটা আমাদের জীবনের ব্যতিক্রম ঘটনা। কখনো ভাবতেই পারতাম না যে, আব্বা আমাদের এভাবে কাছে ডাকবেন, খেতে বলবেন। মৃত্যুর কয়েক মাস আগে এমন আচরণের কথা এখন খুব মনে পড়ে।’

কামরুজ্জামানের গ্রেফতারের বিষয়ে তিনি জানান, ‘ধানমণ্ডির একটি বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন আব্বা। সেখান থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেলখানায় নিয়ে যায়।’

মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী পিতার স্মৃতিচারণ করে খায়রুজ্জামান বলেন, ‘১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হওয়ার আগে যেসব নির্দেশনা দিয়ে গিয়েছিলেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন তিনি।’

পিতার স্মৃতি বহন করা একটি ছবির বিবরণ দিয়ে লিটন বলেন, ‘কলকতার সল্টলেকে অসংখ্য পাইপের মধ্যে প্রচুর বাংলাদেশী শরণার্থীকে বাস করতে হয়েছে। ওই জায়গা পরিবদর্শন করতে যুক্তরাষ্ট্রের জন এফ কেনেডির ভাই এডওয়ার্ড কেনেডিকে নিয়ে গিয়েছিলেন আব্বা। সেই ছবি এখনও আমার কাছে আছে।’

খায়রুজ্জামান জানান, ‘শহীদ জাতীয় চার নেতার স্ত্রীদের মধ্যে শুধু আমার মা জাহানার জামান (কামরুজ্জামানের স্ত্রী) এখনো বেঁচে আছেন। আম্মার বয়স হয়েছে প্রায় ৮২ বছর। তার শেষ ইচ্ছা জেলহত্যা মামলার রায়ের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন দেখে যাওয়া।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাকিদের শাস্তিও নিশ্চিত করা হোক। সেই সঙ্গে ওই দিনের (৩ নভেম্বরের) মূল হত্যাকারী রিসালদার মোসলেউদ্দিনকে ধরে এনে বাংলাদেশের মাটিতে ফাঁসি দেওয়াটা খুব দরকার বলে মনে করি।’



(((সংগৃহীত)))

মুক্ত বাংলাঃ-স্মরণে জাতীয় চার নেতা


১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ৩ নভেম্বর তার ঘনিষ্ঠ চার সহকর্মী সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে কারাগারে হত্যা করা হয়।

রাষ্ট্রের হেফাজতে হত্যাকাণ্ডের এই ঘটনাটি ‘জেল হত্যা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে বাংলাদেশে।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার উৎখাতকারী সেনাসমর্থিত চক্রান্তকারীরাই কারাগারে চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করেছিল। কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ইতিহাসে বিরল।


তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তার ঘনিষ্ঠ চার নেতাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তী অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ক্যু-পাল্টা ক্যু'র ধূম্রজালের মধ্যে ৩ নভেম্বর সংঘটিত হয় জেল হত্যাকাণ্ড।

মুক্ত বাংলাঃ-কাজীপুরে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাঝে সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ ।


বৃহস্পতিবার কাজীপুরে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাঝে সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। 
উপজেলা সমাজসেবা অফিসের আয়োজনে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কাজীপুরের সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয়। 
কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শফিকুল ইসলামে সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ৬৬ জন ব্যবসায়ীকে ১৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। 
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা  ভাইস চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বেলাল, সমাজসেবা অফিসার আমিনা খাতুন কণা, উপজেলা আ.লীগের সভাপতি শওকত হোসেন, সাধারন সম্পাদক খলিলুর রহমান সিরাজী, উচ্চমান সহকারী নজরুল ইসলাম, ইউনিয়ন সমাজকর্মি সাইফুল ইসলাম পলাশী প্রমূখ।

অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে কাজিপুরের ইজিবাইক চালক

                                       সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার অনিক বাবু (২০) নামের এক ইজিবাইক চালককে অজ্ঞান করে মোবাইল ফোন ও বাইক...