কাজিপুরে লক্ষাধিক মানুষের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যমুনা পারাপার: নৌ মালিকগণ নির্বিকার।
বিস্তারিতঃ সিরাজগঞ্জ কাজিপুর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের বাসযমুনার চরাঞ্চলে। প্রতিদিনকার কাজে তাদের ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার যমুনা নদী পাড়ি হতে হয়। আর বর্ষা কিংবা বন্যায়, রোদ কিংবা বৃষ্টিতে কোন সময়েই তাদের নেই ন্যূনতম সেবা পাবার অধিকার। দিনের পর দিন তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা ও জেলা শহরের সাথে যোগাযোগের জন্য নদী পার হচ্ছেন।
উপজেলার
নাটুয়ারপাড়া, খাসরাজবাড়ী, মনসুরনগর, তেকানী, নিশ্চিন্তপুর, শুভগাছা,
চরগিরিশ ইউনিয়ন এবং মাইজবাড়ী ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম পুরোপুরি যমুনা নদী
বেষ্টিত চরাঞ্চল। এ সব এলাকার মানুষের দৈনন্দিন কাজ বা চিকিৎসার জন্য যেতে
হয় জেলা ও উপজেলা সদরে।
জেলা উপজেলা সদরে যোগাযোগের একমাত্র বাহন হচ্ছে ইঞ্জিন চালিত নৌকা। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশু, নারী-পুরুষ, এমনকি গবাদী পশু এবং নানা প্রকার পণ্য সামগ্রি সবাই ইঞ্জিন চালিত নৌকায় পারাপার হয়। বৃষ্টি, ঝড় তুফানের মধ্যেও প্রতিদিনই দুর্গম চরাঞ্চলের মানুষ যমুনা নদী পাড়ি দিয়ে তাদের নিজ গন্তব্যে যোগাযোগ রক্ষা করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গম চরাঞ্চলে নাটুয়ারপাড়ার নৌকা ঘাঁট থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকা ঝড় তুফানের মধ্যে ছেড়ে যায়। কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে বাণিজ্যিক ভাবে যাত্রীবহনের কাজে নিয়োজিত এই সকল শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নৌকাগুলো যাত্রী ও মালামাল বহন করে দেদাচ্ছে চলাচল করছে।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এসব নৌকায় নেই কোন বসার ব্যবস্থা, ছই কিংবা লাইফ জ্যাকেট। দূর্গম চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়ার একাধিক ব্যবসায়িরা জানান, বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় মৃত্যুর ঝুঁকি থাকা সত্বেও চরাঞ্চলের মানুষকে বাধ্য হয়ে এসব নৌযানে চলাচল করতে হচ্ছে।
ব্যবসায়ি ছাড়াও প্রতিদিন সাধারণ মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এমনকি সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীরাও নিরাপত্তাহীনভাবে যমুনার পার হন। এসব চরের মানুষ অসুস্থ্য হলে উপজেলা কিংবা জেলা শহরে যাতায়াতের জন্যে এসব নৌকায় পাড়ি দিতে হয়। এলাকাবাসি ও যাত্রীরা অভিযোগ করেন, প্রতিদিন শত শত যাত্রী যাতায়াত করে নাটুয়ারপাড়া ও মেঘাই নৌকা ঘাট দিয়ে। ঘাট কর্তৃপক্ষ নৌকা পরাপারে জনপ্রতি ভাড়া নেন ২৫ টাকা।
আর ১০ কেজির বেশি মালামাল নিলেই তার জন্যে আলাদা ভাড়া দিতে হয়। অথচ তাদের যাত্রী সেবার মান বাড়াতে কোন উদ্যোগ নেই না। উপজেলা পরিষদ থেকে মেঘাই ঘাটে একটা যাত্রী ছাউনি তৈরি করেছে। কিন্তু তাতে যাত্রীদের তেমন কোন সুবিধা হয়নি। আর নৌঘাটে নেই টয়লেট, বসার ব্যবস্থা। সরকারীভাবে একটি পল্টুন থাকলেও সেখানে একটির বেশি নৌকা লাগানো সম্ভব নয়।
ফলে প্রায়ই যাত্রীদের ঝুঁকিপূর্ণ সিঁড়ি দিয়ে, পানি বা বালির মধ্যে লাফিয়ে নামতে হয়। এতে করে শিশু, বৃদ্ধদের চরম কষ্ট সহ্য করতে হয়। সাইকেল, মোটসাইকেল ও মালামাল নৌকায় উঠানোর জন্য নেই ভালো ব্যবস্থা। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়, রোগী ও গর্ভবতী মায়েদের উপজেলা বা জেলা হাসপাতালে নেওয়ার ক্ষেত্রে।
প্রতিদিন যমুনা পার হয়ে চরের স্কুলে শিক্ষকতা করা শফিকুল ইসলাম শামসুল আলম, রেদওয়ান ও সাইফুদ্দিন জানান, আমরা প্রতিদিন প্রায় এপার থেকে ৭০ থেকে ৮০ জন শিক্ষক নিয়মিত নৌকা ঘাট দিয়ে চলাচল করি। কিন্তু নৌকা ঘাটে ন্যূনতম যাত্রীসেবা নেই।
নৌকার নির্ধারিত যাত্রী না হওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ঘাট থেকে অন্তত দুইশত ফুট দূরে ছোট্ট একটা অপেক্ষমান কক্ষ থাকলেও সেখানে রিক্সা ও ভটভটি, ভাড়ায় মোটসাইকেল, অটো রিক্সা চালকরা বসে আড্ডা দেয়। অথচ ঘাট কর্তৃপক্ষের এদিকে কোন খেয়াল নেই। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া দেখা দিলেও অনেক সময় যাত্রী ও মলামালসহ নৌকাগুলো ডুবে গিয়ে এ পর্যন্ত অনেক যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন। অনেক ব্যবসায়ী মালামাল হারিয়ে পথে বসেছেন।
নাটুয়ারপাড়া ঘাট মালিক সমিতির সভাপতি ওমর আলী জানান, ঘাটগুলো প্রায়ই নানাস্থানে সরিয়ে নিতে হয় বলে যাত্রীদের সুযোগ সুবিধার জন্যে তেমন কোন স্থায়ী ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়না। তবে যাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানান।
নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক জানান, আমরা কাজিপুরের চরাঞ্চল বাসী, প্রশাসনের কাছে বারবারই দাবি করেছি চরাঞ্চলের মানুষের নিরাপদ যোগাযোগের ব্যবস্থা করার জন্য। আশা করি কর্তৃপক্ষ সত্বর এ বিষয়ে নজর দেবেন।
সৌজন্যেঃসিরাজগঞ্জ কন্ঠ।
বিস্তারিতঃ সিরাজগঞ্জ কাজিপুর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের বাসযমুনার চরাঞ্চলে। প্রতিদিনকার কাজে তাদের ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার যমুনা নদী পাড়ি হতে হয়। আর বর্ষা কিংবা বন্যায়, রোদ কিংবা বৃষ্টিতে কোন সময়েই তাদের নেই ন্যূনতম সেবা পাবার অধিকার। দিনের পর দিন তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা ও জেলা শহরের সাথে যোগাযোগের জন্য নদী পার হচ্ছেন।

জেলা উপজেলা সদরে যোগাযোগের একমাত্র বাহন হচ্ছে ইঞ্জিন চালিত নৌকা। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশু, নারী-পুরুষ, এমনকি গবাদী পশু এবং নানা প্রকার পণ্য সামগ্রি সবাই ইঞ্জিন চালিত নৌকায় পারাপার হয়। বৃষ্টি, ঝড় তুফানের মধ্যেও প্রতিদিনই দুর্গম চরাঞ্চলের মানুষ যমুনা নদী পাড়ি দিয়ে তাদের নিজ গন্তব্যে যোগাযোগ রক্ষা করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গম চরাঞ্চলে নাটুয়ারপাড়ার নৌকা ঘাঁট থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকা ঝড় তুফানের মধ্যে ছেড়ে যায়। কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে বাণিজ্যিক ভাবে যাত্রীবহনের কাজে নিয়োজিত এই সকল শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নৌকাগুলো যাত্রী ও মালামাল বহন করে দেদাচ্ছে চলাচল করছে।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এসব নৌকায় নেই কোন বসার ব্যবস্থা, ছই কিংবা লাইফ জ্যাকেট। দূর্গম চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়ার একাধিক ব্যবসায়িরা জানান, বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় মৃত্যুর ঝুঁকি থাকা সত্বেও চরাঞ্চলের মানুষকে বাধ্য হয়ে এসব নৌযানে চলাচল করতে হচ্ছে।
ব্যবসায়ি ছাড়াও প্রতিদিন সাধারণ মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এমনকি সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীরাও নিরাপত্তাহীনভাবে যমুনার পার হন। এসব চরের মানুষ অসুস্থ্য হলে উপজেলা কিংবা জেলা শহরে যাতায়াতের জন্যে এসব নৌকায় পাড়ি দিতে হয়। এলাকাবাসি ও যাত্রীরা অভিযোগ করেন, প্রতিদিন শত শত যাত্রী যাতায়াত করে নাটুয়ারপাড়া ও মেঘাই নৌকা ঘাট দিয়ে। ঘাট কর্তৃপক্ষ নৌকা পরাপারে জনপ্রতি ভাড়া নেন ২৫ টাকা।
আর ১০ কেজির বেশি মালামাল নিলেই তার জন্যে আলাদা ভাড়া দিতে হয়। অথচ তাদের যাত্রী সেবার মান বাড়াতে কোন উদ্যোগ নেই না। উপজেলা পরিষদ থেকে মেঘাই ঘাটে একটা যাত্রী ছাউনি তৈরি করেছে। কিন্তু তাতে যাত্রীদের তেমন কোন সুবিধা হয়নি। আর নৌঘাটে নেই টয়লেট, বসার ব্যবস্থা। সরকারীভাবে একটি পল্টুন থাকলেও সেখানে একটির বেশি নৌকা লাগানো সম্ভব নয়।
ফলে প্রায়ই যাত্রীদের ঝুঁকিপূর্ণ সিঁড়ি দিয়ে, পানি বা বালির মধ্যে লাফিয়ে নামতে হয়। এতে করে শিশু, বৃদ্ধদের চরম কষ্ট সহ্য করতে হয়। সাইকেল, মোটসাইকেল ও মালামাল নৌকায় উঠানোর জন্য নেই ভালো ব্যবস্থা। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়, রোগী ও গর্ভবতী মায়েদের উপজেলা বা জেলা হাসপাতালে নেওয়ার ক্ষেত্রে।
প্রতিদিন যমুনা পার হয়ে চরের স্কুলে শিক্ষকতা করা শফিকুল ইসলাম শামসুল আলম, রেদওয়ান ও সাইফুদ্দিন জানান, আমরা প্রতিদিন প্রায় এপার থেকে ৭০ থেকে ৮০ জন শিক্ষক নিয়মিত নৌকা ঘাট দিয়ে চলাচল করি। কিন্তু নৌকা ঘাটে ন্যূনতম যাত্রীসেবা নেই।
নৌকার নির্ধারিত যাত্রী না হওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ঘাট থেকে অন্তত দুইশত ফুট দূরে ছোট্ট একটা অপেক্ষমান কক্ষ থাকলেও সেখানে রিক্সা ও ভটভটি, ভাড়ায় মোটসাইকেল, অটো রিক্সা চালকরা বসে আড্ডা দেয়। অথচ ঘাট কর্তৃপক্ষের এদিকে কোন খেয়াল নেই। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া দেখা দিলেও অনেক সময় যাত্রী ও মলামালসহ নৌকাগুলো ডুবে গিয়ে এ পর্যন্ত অনেক যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন। অনেক ব্যবসায়ী মালামাল হারিয়ে পথে বসেছেন।
নাটুয়ারপাড়া ঘাট মালিক সমিতির সভাপতি ওমর আলী জানান, ঘাটগুলো প্রায়ই নানাস্থানে সরিয়ে নিতে হয় বলে যাত্রীদের সুযোগ সুবিধার জন্যে তেমন কোন স্থায়ী ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়না। তবে যাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানান।
নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক জানান, আমরা কাজিপুরের চরাঞ্চল বাসী, প্রশাসনের কাছে বারবারই দাবি করেছি চরাঞ্চলের মানুষের নিরাপদ যোগাযোগের ব্যবস্থা করার জন্য। আশা করি কর্তৃপক্ষ সত্বর এ বিষয়ে নজর দেবেন।
সৌজন্যেঃসিরাজগঞ্জ কন্ঠ।
No comments:
Post a Comment