Wednesday, 15 March 2017

কাজিপুরে যমুনা নদী নালায় পরিণত!! হাজারো নৌ-শ্রমিক ও জেলের মানবেতর জীবনযাপন।

কাজিপুরে যমুনা নদী নালায় পরিণত!! হাজারো নৌ-শ্রমিক ও জেলের মানবেতর জীবনযাপন।
বিস্তারিতঃ সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত যমুনা নদীতে ড্রেজিং এবং খনন না করায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পলি জমে এখন নালায় পরিণত হয়েছে। ফলে হাজারও নৌ-শ্রমিক এবং জেলেরা বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনেকে বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন।
উপজেলার মাইজবাড়ী, কাজিপুর সদর, গান্ধাইল, শুভগাছা, খাসরাজবাড়ী, নাটুয়ারপাড়া, তেকানী, মনসুরনগর, চরগিরিশ ও নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত রাক্ষুসী যমুনা নদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। এর বুকজুড়ে জেগে উঠেছে হাজার হাজার একর আবাদি জমি। জমির মালিকরা জেগে ওঠা চরে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করে সংসার পরিচালনা করছেন।
কিন্তু ভরা নদীতে যে সব নৌ-শ্রমিক নৌকা চালিয়ে এবং জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত সেই নৌ-শ্রমিক ও জেলেরা আজ বেকার হয়ে পড়েছেন। তারা এখন স্ত্রী, পুত্র পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। নদীতে পানি না থাকায় নৌ-শ্রমিক এবং জেলেরা তাদের উপকরণ নৌকা এবং জাল বিক্রি করে দিয়ে ভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই পেশায় হাজারও শ্রমিক দাদন ব্যবসায়ী এবং এনজিও’র কাছ থেকে চড়া ঋণ নিয়ে বাড়িতে খোরাকি দিয়ে শহরে পাড়ি জমাচ্ছেন। অনেকে রিকশা, ভ্যান, টেম্পু, সিএনজি, বাস-ট্্রাক হেলপার, গার্মেন্টেস শ্রমিক, রাজমিস্ত্রির কাজে জড়িয়ে পড়েছেন। কাজিপুর ইউনিয়নের জেলে বিজয় দাস, নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের পরিমল, শুভগাছা ইউনিয়নের জেলে বিময়ল ও বিকাশ কুমার জানায়, যমুনা নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় এখন আর জাল ফেলে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে আমরা এ পেশা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়েছি।
কাজিপুরের মেঘাই নৌ-ঘাটের নৌ-শ্রমিক আল-আমিন, বাদশা, সাইফুল ইসলাম, আজিবার, বাবলু, বেলাল, নাটুয়ারপাড়া নৌ-ঘাটের সেলিম, জামাল, হাসেম ও নজরুল ইসলাম জানায়, আজ থেকে ১০-১২ বছর আগে গোটা বছরই নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতাম। এখন যমুনা নদী বিভিন্ন শাখা নদী এবং নালায় পরিণত হয়েছে। নৌকা চালানোর মত কোন জায়গা নেই। তাই নৌকা বিক্রি করে দিয়ে বিভিন্ন পেশায় কাজ করে সংসার পরিচালনা করছি।
বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসোসিয়েশনের সভাপতি ও কাজিপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক বকুল সরকার জানান, যমুনা নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় ১০টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কমপক্ষে এক হাজার নৌ-শ্রমিক এবং জেলে আজ বেকার হয়ে পড়েছে। ওই সব নৌ-শ্রমিক ও এবং জেলেরা বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে দিয়ে অতিকষ্টে জীবনযাপন করছেন। যমুনা নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনলে হয়তো ওই সব শ্রমিক পুনরায় তাদের পেশায় জড়িয়ে পড়তে পারবে। এ জন্য নদী খনন করা জরুরি

No comments:

Post a Comment

অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে কাজিপুরের ইজিবাইক চালক

                                       সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার অনিক বাবু (২০) নামের এক ইজিবাইক চালককে অজ্ঞান করে মোবাইল ফোন ও বাইক...