Saturday 1 April 2017

কাজিপুরের নাটুয়ার পাড়ায় স্কুল, কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত।


 
তাদের_নেই_কোন_খেলার_মাঠ!!

আজকের শিশু আগামীদিনের রাষ্ট্র নায়ক কিংবা শিশুর কথা শুনব মোরা হাসবে শিশু গড়বে ধরা এ জাতীয় শ্লোগান কে সামনে রেখে প্রতিবছর শিশু অধিকার সপ্তাহ পালিত হলেও প্রতি পদে পদে লাঞ্ছিত বঞ্চিত হচ্ছে কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের শিশুরা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে। মেধা বিকাশের সুষ্ঠু পরিবেশ কিংবা অংশগ্রহণের সুযোগ থাকছেনা অনেক শিশুর, বিশেষ করে নাটুয়ারপাড়ার স্কুল,কলেজের শিক্ষাথীদের মৌলিক অধিকার অধিকাংশ ক্ষেত্রে উপেক্ষিত। শিশুর প্রথম লেখাপড়া শুরু হয় মূলত মা-বাবার কাছে। নিজের ঘরের চার দেয়ালের বাইরে কেবল মাত্র শিক্ষকরা আনন্দ ঘন পরিবেশে তাদের চাওয়া পাওয়ার মাধ্যমে আনমনা শিশু শিক্ষার্থীদের পড়া শুনার প্রতি আগ্রহী করে গড়ে তোলেন। প্রাথমিক শিক্ষাই একটি শিশুর শিক্ষা জীবনের মূল ভিত্তি হিসাবে গড়ে ওঠে।
প্রাথমিক শিক্ষার ওপর নির্ভর করেই গড়ে ওঠে ব্যক্তি বা জাতির ভবিষ্যত। কিন্তু প্রথমিক বিদ্যালয়ে যদি শিশুর সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ না পাওয়া যায় তাহলে জাতির মেরুদন্ড কখনো সোজা হতে পারবে না, এ জন্য দরকার শিশু বান্দব শিক্ষার পরিবেশ। শিশু শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে শিশুদের বিনোদন ও অংশগ্রহণের বিষয়টি ও নিশ্চিত করতে হবে। শিশুদের হই হুল্লা আর লাফা লাফির মধ্যে দিয়ে তাদের প্রাথমিক শিক্ষা জীবন অতিবাহিত হয়ে থাকে। একারণে প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের শিক্ষার পাশাপাশি বিকাশের জন্য খেলা ধুলার বিষয়টি অত্যবশকীয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার যমুনা পুর্ব নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নে অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয় ও নাটুয়ারপাড়ার ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থীদের খেলার জন্য কোন মাঠ নেই। কোন কোন বিদ্যালয়ে এ্যাসেম্বলি ক্লাস কিংবা লাইনে দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সুযোগ নেই। কোথাও শুধুমাত্র ভবন আছে মাঠ গেছে নদীর বুকে। স্বাভাবিক ভাবে মাঠের অভাবে শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশ বাঁধা গ্রস্থ হচ্ছে।
ঘোড়া গাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মাঠের অভাবে ক্লাস রুমেই টিফিন কিংবা অন্য অবসর সময়ে নিরলস সময় কাটায়। সে কারণে ছাত্র ছাত্রীরা টিফিন পিরিয়ডে তাদের স্কুল সংলগ্ন নাটুয়ারপাড়ার ব্যস্ততম সড়কের উপর দিয়ে ছোটা ছুটি করে থাকে। রহিম নামের ৭ম শ্রেণীর এক ছাত্র জানায় আমাদের খেলাধুলার জন্য কোন ফাকাঁ জায়গা নেই। আমাদের খেলার মাঠ নেই। এ প্রসঙ্গে সহকারী শিক্ষক বলেন আমাদের বিদ্যালয়ে কোন মাঠ নেই। জাতীয় সঙ্গীত ও এ্যাসেম্বলী ক্লাস করতে খুবই কষ্ট হয়।
চরাঞ্চলের প্রাণ কেন্দ্রে নাটুয়ারপাড়ায় অবস্থিত নাটুয়ারপাড়া ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থীদের কোন খেলা ধূলার সুযোগ নেই।অভিযোগ রইয়েছে কলেজের শিক্ষার্থীদের খেলা মাঠ না বানিয়ে,মাঠের মধ্যে পুকুর বানিয়ে মাছ চাষ করছে নাটুয়ারপাড়া ডিগ্রী কলেজর ম্যানেজিং কমিটি লোক জন।গত বছর নাটুয়ারপাড়া ডিগ্রি কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা খেলা মাঠে জন্য অান্দোলন করলে ও কোন লাভ হয়নি।
নাটুয়ারপাড়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের অবস্থা আরো করুন। খেলার মাঠের মধ্যে অবস্থিত এ বিদ্যালয়ে ও শুধুমাত্র ক্লাস রুম ছাড়া বাকি এক ইঞ্চি মাঠ পযন্ত নেই। ছাত্র ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে এক বার প্রবেশ করলে আর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
নাটুয়ারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের খেলার মাঠ না থাকায় দৈনিক এ্যাসেম্বলি ক্লাস ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন হচ্ছে না। মাঠ না থাকা বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা অবসর সময়ে অনেকটা বাধ্য হয়ে ক্লাস রুমের মধ্যেই বন্দি হয়ে থাকতে হয়। সে কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাভাবিক মেধা বিকাশে বাঁধা গ্রস্ত হয়ে পড়ছে। অনেক ছাত্রছাত্রী বিদ্যালয়ে আনন্দ ঘন পরিবেশ ও খেলা ধুলার সুযোগ না থাকায় অকালে শিক্ষা জীবন থেকে ঝরে পড়েছে। অপর দিকে, খেলার মাঠ না থাকায় নাটুয়ারপাড়ার কোন স্কুল কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কিংবা অন্য কোন প্রতিযোগিতা মূলক অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্বভ হয়ে উঠছেনা। যে কারণে ছাত্র ছাত্রীদের পড়া শুনার প্রতি আগ্রহী করে তোলা সস্বভ হচ্ছে না।
জাতিসংঘের সনদ আনুযায়ী শ্বিশুর স্বাভাবিক বিকাশ ও অংশগ্রহণের কথা বলা হলেও নাটুয়ারপাড়ার অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়,হাই স্কুল ও নাটুয়ারপাড়ার ডিগ্রি কলেজে এ বিষয়টি উপেক্ষিত হচ্ছে।
এলাকার লোকজন জানান, এসব বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্ব না নেয়া শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিদের গুরুত্ব না দেয়া, প্রসাশনের বাড়তি ঝামেলা মনে করে এড়িয়ে যাওয়া, শিক্ষকদের সোচ্চার না হওয়া, অবিবাভকদের অসচেতনতা, প্রভৃতি কারণে প্রাথমিক ও উচ্চ স্তরের ছাত্র-ছাত্রীরা খেলা ধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সর্বপরি,শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী করতে হলে অবশ্যই স্কুল,কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা বিকাশ, অংশ গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে-দিতে হবে একটি আনন্দঘন পরিবেশ। আনন্দঘন ও সুষ্ঠু পরিবেশের অভাবে বর্তমানে কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়ার আশংকাজনক হারে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা অকালে ঝরে পড়েছে, এসব বিষয়ে এখনি সবার এগিয়ে আসতে হবে নতুবা অদূর ভবিষ্যতে নাটুয়ারপাড়ার প্রাথমিক বা উচ্চ স্তরের শিক্ষার কাংখিত অর্জন অনেকাংশে ব্যাহত হবে বলে অবিভাবকরা মনে করেন।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, উরোক্ত বিষয় গুরুত্ব সাথে বিবেচনা করে কাজিপুরের মা,মাটিও মানুষের নেতা জনাব,প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয়( সাবেক এমপি) ,নাটুয়ারপাড়ার স্থানীয় আ'লীগের নেতাদের ও জনপ্রতিনিধিদের খেলার মাঠ তৈরি করার জন্য বার বার নির্দেশ প্রধান করলেও,নাটুয়ারপাড়ার আ'লীগের নেতারা এই বিষয়ে নিচ্ছে না কার্যকরী পদেক্ষেপ।
((সংগৃহীত খবর))
সূত্রঃ আমাদের নাটুয়ার পাড়ার সমাচার।

No comments:

Post a Comment

অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে কাজিপুরের ইজিবাইক চালক

                                       সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার অনিক বাবু (২০) নামের এক ইজিবাইক চালককে অজ্ঞান করে মোবাইল ফোন ও বাইক...